ঢাকা ৫ই মার্চ, ২০২১ ইং | ২০শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২০
জনকল্যাণ ডেস্ক: চট্টল্লার করোনাযোদ্ধা আলেমগণের মধ্য থেকে মরহুম জমির উদ্দিন নানুপুরী রহ. এর সুযোগ্য সন্তানগণ চট্টগ্রামে করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া দুইশ’র বেশি লাশ দাফনের পর এবার ৭০ শয্যার একটি করোনা হাসপাতাল তৈরি করেছেন। চট্রগ্রাম হালিশহরে ছয়তলা ভবনে তৈরি করা হয়েছে হাসপাতালটি। যার নাম ‘আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল’।
চট্টগ্রামে করোনার প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকায় আইসিইউ ও চিকিৎসাসেবা না পেয়ে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছেন অসহায় মানুষরা। তাই বিবেকের তাড়নায় করোনায় আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে এগিয়ে এলেন তারা তিন ভাই। হাসপাতালটিতে বসানো হয়েছে ১০টি আইসিইউ বেডও। তার মধ্যে থাকছে পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। ছয়তলা ভবনজুড়েই রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম। হালিশহরের বি-ব্লকের চৌধুরীপাড়ায় হাসপাতালটি অবস্থিত।
আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘নগরীর হালিশহরে যে ভবনটিতে হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে তার মালিক নাসরিন আক্তার আমেরিকা প্রবাসী, দানশীল মানুষ। তিনি বহু আগে স্থানীয়দের দাতব্য সেবা দেওয়ার জন্য ভবনটি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু তিনি প্রবাসে থাকায় নিয়মিত মানুষকে সেবা দিতে না পারায় ভবনটিকে হাসপাতাল তৈরিতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রামে এখন করোনায় লণ্ডভণ্ড অবস্থা তৈরি হওয়ায় আমরা এটিকে করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করেছি।’
জানা গেছে, ছয়তলা বিশিষ্ট হাসপাতালটির নিচের তলায় থাকছে রিসেপশন, জরুরি বিভাগ ও অবজারভেশন ওয়ার্ড। বাকি পাঁচটি তলায় বসানো হয়েছে ৭০টি শয্যা। চলতি সপ্তাহের শেষে হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। ইতোমধ্যেই হাসপাতালের প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন অক্সিজেন লাইন বসানোর কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ছয়জন চিকিৎসককে প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এখানে করোনা আক্রান্ত রোগীরা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। একটি আইসিইউ সেটআপ করতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা করে খরচ হয়েছে তাদের। সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা পেলে আরও পাঁচটি আইসিইউ সেটআপ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে আল মানাহিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
গত ১৬ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার পর ওই অবহেলিতার প্রথম লাশটি দাফনের মধ্য দিয়ে করোনাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন তারা। এখন পর্যন্ত করোনার উপসর্গ ও করোনায় মৃত ২১১ জনের লাশ দাফন করেছেন। করোনায় আক্রান্তদের সেবা দেওয়া তিন ভাই হলেন মাওলানা হেলাল উদ্দিন জমির উদ্দিন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন ও মাওলানা ফরিদ উদ্দিন বিন জমির। তারা নিজেরাই করোনায় মৃত লাশের জানাজার ইমামতি করছেন, নিজেরাই লাশ কবরে শায়িত করছেন। তাদের সঙ্গে ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবক এ কাজে যুক্ত রয়েছেন। তাঁরা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির প্রখ্যাত পীর আল্লামা জমির উদ্দিন নানুপুরী রহ. এর সন্তান। তারা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালনা করছেন।
‘আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল’-এর পরিচালক মাওলানা হেলাল উদ্দিন জমির উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সে ও পথেই মারা যাচ্ছেন। তাই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে আমরা এগিয়ে এসেছি। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে আমরা আরও আইসিইউ বেড স্থাপন করতে প্রস্তুত রয়েছি। প্রয়াত বাবা আল্লামা জমির উদ্দিন নানুপুরী আমাদের মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন।’
প্রধান উপদেষ্টা: এড. শাহীনূর পাশা চৌধুরী
উপদেষ্টা সম্পাদক: আব্দুল গাফফার
সম্পাদক: মাসুম আল মাহদী
নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল্লাহ সালমান
বার্তা সম্পাদক: ফরিদ আহমদ ফেরদাউস
অফিস: ৩য় তলা রংমহল টাওয়ার, বন্দরবাজার, সিলেট
ইমেইল: news.jonokollan24@gmail.com
ফোন: 008801719291430
Design and developed by syltech